নাব্বির আল নাফিজ : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মহিশকুন্ডি, ভাগজোত,মুন্সিগঞ্জ, কোফটনগর ও রামকৃষ্ণপুর এলাকার একসাথে ৩২ পরিবারের কাছ থেকে সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য জনপ্রতি চার লাখ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে তাদের সৌদি আরবে পাঠিয়ে সেখানে তাদের বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মানব পাচারকারী আলামিন হোসেনের বিরুদ্ধে। এবিষয়ে গত ৯-১২-২০২০ ইং তারিখে ইউনিয়ন পরিষদ বরবার লিখিত অভিযোগ দেন কয়েকজন ভুক্তভোগীর পরিবার। তবে তিন বার সমন জারি করা হলেও এক দিনও সালিসি বৈঠকে হাজির হয়নি আলামিন। এবিষয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমার খালাতো ভাই ঐ ঘাতক আলামিন৷ আলামিন আমার জামাই কে হোটেলে কাজ দেওয়ার কথা বলে সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য ৪ লাখ ৩০ হাজার নেয়। কয়েক মাস পর আমার জামাই কে সৌদি আরবে পাঠিয়ে তাকে সেখানে দালাদের কাছে বিক্রি করে দেয় আলানিন।সেখানে আমার জামাই দেড় বছর ধরে অবৈধভাবে একবেলা খেয়ে না খেয়ে খুব কস্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা বার বার আলামিন কে আকামা করে দেওয়ার কথা বললে সে প্রথম প্রথম আকামা করে দেব কিছুদিনের ভিতর না হলে টাকা ফেরত দিয়ে দেব এমন কথা বলেলেও এখন সে সরাসরি অস্বীকার করে এবং আমাদের বিভিন্নভাবে প্রাণ নাশের হুমকিও দিচ্ছে। এবিষয়ে আরেক ভুক্তভোগী সবুজের পিতা সাবদুল হোসেন বলেন, আমার ছেলে সবুজ ঢাকায় ২০ হাজার টাকা বেতনের চাকরী করতো। একদিন জুম্মার নামাজ শেষে আলামিন আমাকে বলে চাচা সৌদি আরবের অনেক ভাল ভিসা আছে আনার কাছে। বেতন লাখ টাকার উপরে। আলামিন আমাদের নানা প্রভোলন দেখিয়ে আমার কাছ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা নিয়ে আমার ছেলে সবুজ কে সৌদি আরবে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে ৩ মাসের মধ্যে আকামা করে দেওয়ার কথা থাকলে আজও আকামা করে দেয়নি। আমি আলমিন কে জিজ্ঞেস করলে সে আজ কাল আজ কাল করে ঘুরাতে থাকে। এবিষয়ে আমরা ইউনিয়নের পরিষদে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আলামিন কে ৩ বার সমন পাঠালেও সে একদিন উপস্থিত হয়নি। ভুক্তভোগী পরিবার হিসেবে আমাদের একটায় দাবি এই মানব পাচারকারী আলামিন কে আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচারের জোর দাবী জানাচ্ছি। এবিষয়ে এলাকার সাধারণ জনগণ বলেন, আলানিন আমাদের এলাকা সহ আশপাশের এলাকার ৪০ থেকে ৫০ জনে কাছ থেকে ৪ থেকে ৬ লাখ নিয়ে টুরিস্ট ভিসায় লোক পাঠিয়ে তাদের বিক্রি করে দেয় কোম্পানির কাছে। এখন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন মানব পাচারকারী আলামিনের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমরা চাই এই মানব পাচারকারী আলামিনকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির জোর দাবী জানাচ্ছি। এবিষয়ে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পুরুষ মেম্বার টিপু ও মহিলা মেম্বার ফিরোজা খাতুন বলেন, আলামিনের বিরুদ্ধে মানব পাচারের ঘটনা আমরা শুনেছি। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা আলামিন কে ৩ বার সমন পাঠিয়েছি কিন্তু তিনি একদিন ও হাজির হয়নি। আমরা আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করবো। এবিষয়ে মানব পাচারকারী আলামিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি আদম ব্যাবসার কথা সরাসরি সরাসরি অস্বীকার করেন এবং সংবাদ প্রকাশ করলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। মানব পাচারকারী ঘাতক আলামিন হোসেন দৌলতপুর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ এলাকার মৃত নাজিরের ছেলে।