রাজবাড়ী প্রতিনিধি ঃ
কথায় আছে, খাটো কাপড় টানলে লম্বা হয় না, আর বেশি টানাটানি করলে তা ছিঁড়ে যায়। তেমনি অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের কিছু টাকা অথবা কয়েক কেজি চাল-ডাল দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা যায় তবে তাদের স্বনির্ভর করা সম্ভব নয়। যে কারণে গতানুগতিক চিন্তাধারার বাইরে পা রেখেছেন, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম।
তিনি মনে করেন, স্বনির্ভর করতে হলে কর্ম প্রয়োজন। সে কারণেই তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া দরিদ্র অসহায় পরিবার গুলো চিহ্নিত করে তাদের অভিভাবক হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। দারিদ্রতার কষাঘাতে নিমজ্জিত পরিবার গুলোকে ঘুড়ে দাঁড়ানোর শক্তি যোগাচ্ছেন। তার নিজ প্রচেষ্টায় সমাজের মহৎ হৃদয়ের মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে তৈরী কারা আর্থিক তহবিল থেকে এরই মাঝে ৭২টি পরিবারের জন্য বিনামূল্যে ৭২টি রিকশা ও ভ্যান কিনে দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার সকালেও তিনি ১৭ জনের হাতে তুলে দিয়েছেন ভ্যান।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, স্বনির্ভর পরিবার সৃষ্টি করাই তার প্রধান উদ্দেশ্য। যে কারণে তিনি এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। যে সব পরিবারকে তিনি রিকশা ও ভ্যান দিয়েছেন, তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। পরিবার পরিজন নিয়ে দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করা ওই পরিবারে গুলো রিকশা-ভ্যান চালিয়ে অর্থ উপার্যন করবে এবং ওই অর্থ দিয়ে সংসার পরিচালনা, সন্তানদের পড়ালেখা করানো এবং ঋণ মুক্ত হবে। যার মধ্য দিয়ে ওই সব পরিবারের সন্তানরা শিক্ষা-দিক্ষায় নিজেদের গড়ে তোলারও সুযোগ পাবে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তার লক্ষ শতাধিক পরিবারকে এই কার্যক্রমের আওতায় আনা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ মাহাবুর রহমান শেখ বলেন, ইতোমধ্যেই রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকের এই কার্যক্রম প্রসংশিত হয়েছে। এই কার্যক্রমের ফলে অসহায় নিপিড়িত পরিবার গুলো পেলো বেঁচে থাকার অবলম্বম। তাদের এই কাজের ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি মনে করেন।
রিকশা পাওয়া সবুজ মোল্লা, জালাল মিয়াসহ আরো কয়েকজন বলেন, করোনাকালে গরু-ছাগল বিক্রি করে কোন রকমে সংসার পরিচানা করেছেন। সন্তানদের মুখে ভালো খাবারও তুলে দিতে পারেন নি। উল্টা হয়েছেন ঋণগ্রস্থ। জেলা প্রশাসক তাদের কর্মের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এখন এই ভ্যান চালিয়ে অর্থ রোজগার করে সংসার পরিচালনার পাশাপাশি ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়া এবং সন্তানদের লেখা পড়া করানোও সম্ভব হবে। তারা জেলা প্রশাসকসহ এই কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন।