রাজবাড়ী প্রতিনিধি : শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভা নির্বাচন।১৪ ফ্রেরুয়ারীর নির্বাচনে সবাই বিজয়ের আশায় । এ নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১১ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩২ জন, মোট ৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।
নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, ততই নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াচ্ছে প্রার্থীরা, ভোটার ও সমর্থকদের মাঝে এবং রাস্তা-ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, মাদক-সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষা-স্বাস্থ্য ক্ষাতে ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে, প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন প্রার্থী ও সমর্থকরা। প্রচারনায় পিছিয়ে নাই কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এছাড়া নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করেছে প্রশাসন।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভা নির্বাচন। এ নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী থাকলেও ভোটের লাড়াই হবে মূলত ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগ মনোনীত গোয়ালন্দ পৌর যুব লীগের সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম মন্ডলের (নৌকা) ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র শেখ মোঃ নিজাম এর ছোট ভাই শেখ মোঃ নজরুল ইসলামের (জগ) প্রতীকের মধ্যে। এমনটাই প্রত্যাশা করছেন ভোটাররা।
মেয়র প্রার্থীরা হলো আওয়ামী লীগ মনোনিত উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম মন্ডল (নৌকা), সতন্ত্র প্রার্থী পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ মোঃ নজরুল ইসলাম (জগ) ও জাতীয় পার্টি মনোনিত জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সম্পাদক হেলাল মাহমুদ (লাঙ্গল)। ইতিমধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিদ্রোহী ও সতন্ত্র প্রার্থী শেখ মোঃ নজরুল ইসলাম এবং তার ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পৌর মেয়র শেখ মোঃ নিজাম নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ায় দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গোয়ালন্দ পৌরসভায় মোট ভোটার ১৬ হাজার ৫৪৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৮ হাজার ২৫৪ জন ও নারী ভোটার ৮ হাজার ২৯৪ জন। সাধারন ভোটাররা জানান, তারা নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে এবার তারা এমন একজন প্রার্থীকে বিজয়ী করতে চান, যে পৌরসভার অবকাঠামো, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, মাদক-সন্ত্রাস নির্মূল এবং নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবে। বিগত ১৯/২০ বছর পৌরসভার তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। তাই এবার নতুন একজনকে তারা মেয়র নির্বাচিত করতে চান।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মোঃ নজরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, পৌরবাসী দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ কাজ করছে। তিনি একটি আধুনিক পৌরসভা গড়তে চান। পৌরসভায় গত ১৯ বছরে যে উন্নয়ন হয়নি, নৌকার বিজয় হলে সে উন্নয়ন হবে। এছাড়া তিনি পৌরবাসীকে নিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা করা সহ মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূল করবেন এবং সকল ভেদাভেদ ভুলে গোয়ালন্দ পৌরসভাকে একটি বসবাস যোগ্য ও নিরাপদ পৌরসভা গড়ে তুলবেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছেন এবং ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সারা আছে। আশা করছেন ভোটারদের সবার ভালবাসা নিয়ে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। প্রশাসনের সহযোগিতায় অবাধ, সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেও তিনি আশাবাদী। নির্বাচিত হলে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, রাস্তা-ঘাট সহ অবকাঠামোর উন্নয়ন ও মাদক-সন্ত্রাস নির্মূলে সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।
উল্লেখ্য, একই দিন (১৪ ফেব্রুয়ারী) রাজবাড়ী সদর পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ৪ জন মেয়র, ১২ সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ৪৯ জন সাধারন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন। এ পৌরসভায় মোট ভোটার ৪৫ হাজার ২০ জন এবং ভোট কেন্দ্র ১৮টি।
মেয়র প্রার্থীরা হলো, আওয়ামী লীগ মনোনীত জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী (নৌকা), বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলমগীর হোসেন তিতু (নারকেল গাছ), বিএনপি মনোনীত জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া (ধানের শীষ), এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত পৌর জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক কেএ রাজ্জাক মেরিন (লাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।