রাজবাড়ী প্রতিনিধি ঃ
ছুটি নিয়ে বাড়ীতে বেড়াতে আসা নাজমা বেগম (৪২) নামে একজন গার্মেন্ট কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ ঘাতক দ্বিতীয় স্বামী মকিম মোল্লা (৪৫) কে গ্রেফতার করে। বুধবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠিয়েছে। আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সুধাংশু শেখরের কাছে মকিম ১৬৪ ধারায় নাজমা বেগমকে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রাজবাড়ীর কালুখালী থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম।
এসআই জাহিদুল ইসলাম জানান, মকিম রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মাজবাড়ী ইউনিয়নের পচাকুলিটিয়া গ্রামের আজিজ মোল্লার ছেলে এবং নাজমা বেগম একই ইউনিয়নের কুশরডাঙ্গী গ্রামের মানিক মন্ডলের মেয়ে। নাজমা বেগমের প্রথম স্বামী বিল্লাল হোসেনের সাথে প্রায় ১২ বছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়, ওই সংসারে রঞ্জু নামে একজন ছেলে সন্তান রয়েছে। অপরদিকে, ৭ বছর পূর্বে নাজমা বেগম মকিমকে বিয়ে করে। তারা গার্মেন্টে চাকুরী করার পাশাপাশি গাজীপুরের বাসন থানার নাওজোর এলাকায় একটি বাসায় বসবাস করতো। ওই বাসার আরেকটি রুমে থাকতো মকিমের প্রথম স্ত্রীও। এক বছর আগে মকিমের দেড় লাখ টাকা নিয়ে নাজমা বেগম বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায় এবং ওই টাকা চাইলে নাজমা বেগম মকিমকে গালাগাল করে ও মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে নাজমা বেগম মকিমকে ডিভোর্স দেয়। এতে মকিম ক্ষিপ্ত হয় এবং সে সুকৌশলে নাজমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। যে কারণে মকিম তিন মাস পূর্বে ৮০ টাকা দিয়ে একটা ছুরি কেনে। একই সাথে গত একমাস ধরে মকিম নাজমা বেগমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ বৃদ্ধি করে। গত বৃহস্পতিবার নাজমা বেগমের বাবার বাড়ীতে বেড়াতে আসে। গত রবিবার সকালে মকিম নাজমা বেগমের সাথে কথা বলে জানতে পারেন নাজমা জেলার পাংশা উপজেলা এলাকায় বাগদুলি গ্রামে থাকা বোন পিঞ্জিরা বেগমের বাড়ীতে বেড়াতে যাচ্ছে। ওই সময়ই সে গাজীপুরের বাসা থে ব্যাগে ছুরিটি নিয়ে জেলার কালুখালী উপজেলার সোনাপুর মোড়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। একই দিন সন্ধ্যার দিকে নাজমা তার বোনের বাড়ী থেকে সোনাপুর মোড়ে এসে পৌছান। সে সময় নাজমার সাথে ছলনা করে চতুরতার সাথে জেলার কালুখালী উপজেলার মাঝমাড়ী ইউনিয়নের কাশমিয়া বিলের মাঝামাঝি নির্জন কাঁচা রাস্তার উপর নিয়ে আসে এবং সেখানে ওই ছুরি দিয়ে ৬টি আঘাত করে নাজমাকে হত্যার পর তার মোবাইল ফোনটি নিয়ে পুনরায় মকিম গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মাঝে পদ্মা নদী পার হওয়া কালিন ওই ছুরি ও নাজমার মোবাইল ফোনটি নদীর পানিতে ফেলে দেয় এবং সে গাজীপুরের বাসায় অবস্থান করতে থাকে।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এমএম শাকিলুজ্জান জানান, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই নাজমা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন এবং ঘাতককে তারা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের এই কাজের ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।