সিলেটে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে (২৫) আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার সকালে হওয়া মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সিলেট বিমানবন্দর এলাকার লাউগুল গ্রামের জামেদ আহমদ ওরফে জাবেদ (৩৬), একই এলাকার ফড়িংউরা গ্রামের মো. মোশাহিদ আহমদ (২৭), ফয়সল আহমদ (২২) ও বাজারতল গ্রামের রাসেল আহমদ (২৪)। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে সিলেট মহানগরের বিমানবন্দর থানা–পুলিশ।
পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, জামেদ আহমদের সঙ্গে কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা ওই তরুণীর (২৫) ভুল নম্বরের সূত্র ধরে মুঠোফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে সিলেটে আসার কথা বলেন জামেদ আহমদ। পরে ১০ জুলাই সন্ধ্যা সাতটার দিকে সিলেটে আসেন ওই তরুণী। সেখান থেকে জামেদ তাঁর নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ওই তরুণীকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলী এলাকা থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সিলেটের খাদিমনগর বুরজান চা–বাগানের সুন্দর মরাকোনা টিলার ওপর একটি ছাউনি ঘরে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন ফয়সল আহমদ, রাসেল আহমদ, জামিল আহমদ। ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়ার পর জামেদসহ চারজন মিলে ওই নারীকে ভয় দেখিয়ে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন ও সঙ্গে থাকা মালামাল এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কেড়ে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এর তিন দিন পর গতকাল সকাল ছয়টার দিকে রুবেল, ইমাম, ফারুক, মো. মোশাহিদ আহমদ ও আবুলের কাছে রেখে ওই চারজন চলে যান। পরে এই পাঁচজন তাঁকে ধর্ষণ করেন।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মো. মোশাহিদকে ওই তরুণীর পাহারায় রেখে চারজন চলে যান। এ সময় ওই তরুণী মোশাহিদের কাছে পানি চাইলে তিনি পানি আনতে যাওয়ার সময় ওই তরুণী পালিয়ে বিমানবন্দর এলাকার মূল সড়কে চলে যান। এ সময় এক পথচারীর সহযোগিতায় ওই তরুণী তাঁর কাছে রাখা একটি সিম কার্ডের মাধ্যমে সিলেটে থাকা খালাতো বোনকে ফোন দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানান। পরবর্তী সময়ে ওই বোন সিলেটে আসার পর ওই তরুণীকে নিয়ে বিমানবন্দর থানায় গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ গতকাল দুপুরে খাদিমনগর বুরজান চা–বাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে জামেদ আহমদ ও মোশাহিদ আহমদকে আটক করেন। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল সন্ধ্যা রাতে অভিযান চালিয়ে ফয়সল আহমদ, রাসেল আহমদকে আটক করে থানায় নিয়ে গেলে ওই নারী তাঁদের শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় আজ সকালে ওই নারী বাদী হয়ে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ৯ জনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ মাইনুল জাকির বলেন, ‘মুঠোফোনে ভুল নম্বরে পরিচয়ের সূত্র ধরে সিলেটে আসার পর ওই তরুণীকে আটকে রেখে দুই দলে বিভক্ত হয়ে দফায় দফায় ধর্ষণের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। মামলা দায়েরের পর ওই নারীকে আজ সকালে চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। ওই মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত অপর আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি