ফজলার রহমান স্টাফ রিপোর্টারঃ-গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর নওগাঁ জেলা পুলিশের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রকৌশলী জনাব আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম মহোদয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পেশাদারিত্ব, সততা, আন্তরিকতা ও মানবিকতার মিশেলে নওগাঁ জেলা পুলিশ তথা টিম নওগাঁকে নিয়ে চলেছেন অনন্য শিখরে।
দায়িত্বগ্রহণের প্রথম থেকেই পুলিশ সুপার মহোদয় সততা ও আন্তরিকতার সাথে প্রতিটি ইউনিটকে পরিচালিত করে চলেছেন। পুলিশ সুপার মহোদয়ের সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় জেলার ১১টি থানার প্রায় প্রতিটি মামলার তদন্ত কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে আটক করা হয়েছে অসংখ্য মাদক ব্যবসায়ী এবং উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ও মাদকদ্রব্য উৎপাদন কারখানা। মোটরসাইকেল চোর চক্রের একাধিক সদস্যকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের হেফাজত থেকে চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। যার কারণে অপরাধীরা এটা বুঝে গেছে যে, নওগাঁ জেলায় অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। আইনের আওতায় তাদের আসতেই হবে।
পুলিশ সুপার মহোদয় সামাজিক সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ করে চলেছেন। সীমান্তবর্তী এলাকায় সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিং সহ বিভিন্ন ধরনের প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করেছেন। নদী বিধৌত এলাকায় শিশুদেরকে সাপে কাটা ও পানি পড়া থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে ব্যানার ও লিফলেটের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। থানা ও ফাঁড়ি সমূহের কাজের গতিশীলতা আনয়নের উদ্দেশ্যে তিনি নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারি কর্মচারীদের করণীয় সম্পর্কে বাণী প্রতিটি থানা-ফাঁড়িতে টাঙিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। মামলা বা জিডি করতে এসে কেউ সমস্যার সম্মুখীন হলে যেন অতি দ্রুত পুলিশ সুপার মহোদয় সহ অন্য যেকোন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারেন সে লক্ষ্যে তাদের প্রত্যেকের ফোন নাম্বার প্রতিটি থানার উন্মুক্ত স্থানে টাঙিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও প্রতিদিন তিনি অসংখ্য দর্শনার্থীদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের সমস্যার সমাধান করেন। পুলিশ ভেরিফিকেশন বা পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে শতভাগ পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তিনি নিজ দায়িত্বে বিভিন্ন ভেরিফিকেশন প্রত্যাশীদের মোবাইল নাম্বারে ফোন করে তারা সঠিক সময়ে তাদের সেবা পেয়েছেন কিনা সেটি নিশ্চিত হন। এভাবেই তিনি তাঁর সকল ইউনিটের সদস্যদের সততা ও পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন। করোনাকালীন সময়ে সারা বিশ্ব যখন এক ভয়াবহ সময় পার করছিল ঠিক তখন নওগাঁ জেলা পুলিশের কর্ণধার পেশাগত দায়িত্বের বাইরে যেয়ে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নিজেদের বেতন রেশনের টাকা থেকে নওগাঁবাসীকে সাহায্য করার চেষ্টা করে চলেছেন। পুলিশ সুপার মহোদয়ের ফোনে এসএমএস করে বা কল করে আর্থিক সাহায্য ও খাদ্য সামগ্রী পেয়েছেন অনেক সাহায্য প্রত্যাশী মানুষ। সাধারণ জনগণকে সচেতন করেছেন, মাইকিং করেছেন, বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে করোনাকালীন সময়ে করণীয় বর্জনীয় সম্পর্কে অবগত করেছেন নওগাঁ জেলাবাসীদের। নওগাঁ জেলা পুলিশের সীমিত সম্পদের মাঝখানেও শহরকে জীবাণুমুক্ত করার জন্য জীবানুনাশক ছড়ানোর ভূমিকা পালন করেছে তারই নেতৃত্বে নওগাঁ জেলা পুলিশ। এমনকি করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাসায় ঈদের শুভেচ্ছা উপহার পাঠিয়েছেন।
তাঁর নেতৃত্বে করোনা যুদ্ধের অন্যতম সম্মুখযুদ্ধ ডাক্তার নার্সদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে টিম নওগাঁ। করোনাকালীন সময়ে ধান কাটার শ্রমিকদের আগমন, অবস্থান ও প্রত্যাবর্তন কালীন পুলিশ সুপার মহোদয়ের কার্যক্রম প্রশংসা করেছে জেলার সর্বস্তরের মানুষ ও ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া। এছাড়াও আমের মৌসুমে সাপাহার, পোরশাসহ নওগাঁ জেলার আম বাজারকে সার্বক্ষণিক পুলিশি মনিটরিং এর মধ্যে রাখাসহ আম ব্যবসাকে প্রসারিত করা এবং নওগাঁকে আমের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে বহুবিধ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন পুলিশ সুপার মহোদয়। সম্মানিত আইজিপি স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী নওগাঁ জেলায় ১০৮টি বিট পুলিশিং অফিস স্থাপনের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন পুলিশ সুপার মহোদয়। সাধারণ জনগণের জন্য যেমন কাজ করেছেন তিনি তেমনি পুলিশ সদস্যদের ওয়েলফেয়ারের জন্য সমানভাবে কাজ করে চলেছেন। প্রায় ১৫০০ এর অধিক সদস্য রয়েছে নওগাঁ জেলা পুলিশ, তিনি প্রতিটি সদস্যের ভালো-মন্দের খোঁজখবর রেখেছেন প্রতিনিয়ত। যানবাহনসহ সব ধরনের লজিস্টিকস সুবিধা প্রদান করার চেষ্টা করেছেন পুলিশ সদস্যদের। থানা ফাঁড়িসহ প্রতিটি পুলিশ ইউনিটের সৌন্দর্যবর্ধন সহ সবজি বাগান করার মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন এবং তা নিয়মিতভাবে তদারকি করেছেন। অফিসার ফোর্সদের ওয়েলফেয়ার সম্পর্কিত যেকোন বিষয় বলার আগেই নিজে থেকেই সমাধান করার চেষ্টা করেছেন পুলিশ সুপার মহোদয়, আর তাইতো কল্যাণ সভায় অফিসার ফোর্সদের আবেদন-নিবেদনের ঝুলি থাকে শূন্য। এভাবেই গত ৩৬৫ দিন ধরে নওগাঁ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার প্রকৌশলী জনাব আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম মহোদয় নওগাঁ জেলা বাসীর জন্য একই সাথে নওগাঁ জেলা পুলিশের প্রতিটি সদস্যদের জন্য অবিরাম কাজ করে চলেছেন। অন্যান্য সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, সামাজিক সংগঠন, সংবাদ ও প্রিন্ট মিডিয়া ও ব্যক্তিবর্গের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে চলেছেন পুলিশ সুপার মহোদয়। আর এভাবেই মাত্র এক বছরে হয়ে উঠেছেন সকলের প্রিয় একজন পুলিশ সুপার।