মংচিন থান, বরগুনা প্রতিনিধি :
ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, ঘাটে ফিরছে বরগুনার জেলেরা
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ নিরাপদ করার লক্ষ্যে বুধবার (১৪ অক্টোবর ) থেকে টানা ২২ দিন সাগর ও নদ-নদীতে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। সাগর ও নদ-নদী থেকে ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা।
এ সময় ইলিশ শিকার, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ ও ক্রয়-বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি জেলে-পরিবারের জন্য ২০ কেজি করে সরকারি সহায়তার চাল বরাদ্দ দেওয়া হবে।
জেলে অধ্যুষিত পাথরঘাটা, তালতলীসহ বিভিন্ন এলাকার জেলেরা তাদের ট্রলার নৌকা নিয়ে ঘাটে ফিরছেন। আবার কেউ কেউ নৌকা ও ট্রলার মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছেন। তবে দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞায়, কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে চিন্তিত জেলেরা।
জেলার মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, বরগুনায় ৩৭ হাজার জেলেকে সরকারি খাদ্য সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। এরমধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় সাত হাজার ৭৭৮ জন, আমতলী উপজেলায় ছয় হাজার ৭৮৯ জন, তালতলীতে ছয় হাজার ৭৪৬ জন, পাথরঘাটা উপজেলায় ১১ হাজার ৪৩৮ জন, বেতাগী উপজোয় তিন হাজার ১৮২ জন ও বামনা উপজেলায় এক হাজার ৬৮ জন জেলে রয়েছেন। এসব জেলে প্রতি (নিষেধাজ্ঞা কালীন সময়) ২০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা চাল দেওয়া হবে।
সদর উপজেলার বাওয়ালকর এলাকার জেলেরা বলেন, নিষিদ্ধ সময়ে ২০ কেজি করে চাল দিয়ে আমাদের সংসার ঠিকমতো চলবে না। আড়তদারদের কাছ থেকে দাদনের টাকা নিয়েই আমার সংসার চালাই। আমাদের আয়ের পথ বন্ধ। সরকার জেলেদের জন্য বিকল্প কোনও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলে ভালো হয়।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি চৌধুরি গোলাম মোস্তফা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের ২০ কেজি করে সরকারি চাল খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। এই সহায়তা দিয়ে একজন জেলের পরিবার চালানো কষ্টকর বিষয়। অনেক জেলের সাপ্তাহিক কিস্তি রয়েছে, আয়ের পথ বন্ধ থাকায় কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে জেলেদের।
জেলার মৎস্য কর্তকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইলিশের প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞাকালে ইলিশ শিকার, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ ও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আইন অমান্যকারীদের জন্য সাজার ব্যবস্থা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে মৎস্য অধিদফতর, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, জেলার ৩৭ হাজার জেলেকে ২০ কেজি করে সরকারি চাল খাদ্য সহায়তার দেয়া হবে।
এ সময় জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আলোচনা চলছে।