রাজনৈতিক কারণে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক এখন তলানিতে। ক্রিকেটেও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হয়না বহুদিন ধরে। কিন্তু একসময় উভয় দলই একে অপরের দেশে সফর করত। ২০০৩-০৪ মৌসুমে সৌরভের নেতৃত্বে পাকিস্তানে গিয়েছিল ভারতীয় দল। সেই সফরে সৌরভ গাঙ্গুলীর ভারতের কাছে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজে যথাক্রমে ৩-২ ও ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল ইনজামাম উল হকের পাকিস্তান। সেই সফরে নিরাপত্তাকর্মীদের ফাঁকি দিয়ে পাকিস্তানের রাস্তায় কাবাব খাওয়ার গল্পই এবার শোনালেন গাঙ্গুলী স্বয়ং।
সৌরভ প্রথম দুই টেস্ট খেলতে পারেননি। তবে শেষ টেস্ট ও তিনটি একদিনের ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ৪৫ দিনের সেই সফরে সৌরভ গাঙ্গুলী পাকিস্তানি স্ট্রিট ফুডের স্বাদ নিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক সেই সফরের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সৌরভ বলেছেন, ‘নিরাপত্তার নামে পাগলামি চলছিল। আমি তো বিরক্ত হয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের না জানিয়েই চলে গিয়েছিলাম স্থানীয় খাবার খেতে। আমাদের বন্ধু রাজদীপ সারদেশাই তা ধরে ফেলে। সে সবাইকে বলে দেয় যে, ভারত অধিনায়ক রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাবাব খাচ্ছে। কাবাব শেষ করে আমি চুপচাপ ওখানেই ডিনার করেছিলাম।’
কিন্তু কেন এভাবে নিরাপত্তাকর্মীদের ফাঁকি দিতে হয়েছিল? জবাবে সৌরভ বলেছেন, ‘নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। প্রথম দিন হোটেলের কক্ষ থেকে বেরিয়ে দেখি একে-৪৭ হাতে দুই জন দাঁড়িয়ে রয়েছেন। একজন তাকিয়ে রয়েছে দরজার দিকে, অন্যজনের নজরে অন্য দিক। আমি হোটেলের ম্যানেজারকে গিয়ে বললাম যে, এখানে ৪৫ দিন থাকতে হবে। তাই ঘরের সামনে থেকে যেন নিরাপত্তা কর্মীদের সরানো হয়। ওদের লবিতে রাখা হোক। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে একে-৪৭ হাতে কাউকে দেখতে চাইছি না। যদি ভুল করেও গুলি বেরিয়ে যায়, তাহলে তো মুশকিল!’
পাকিস্তান তো বহুকাল ধরেই জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে পরচিত। তাই ভারতীয় ক্রিকেটারদের কিছু হলে উপায় ছিল না তাদের। যে কারণে নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি ছিল। সেই ঐতিহাসিক সফরে নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি নিয়ে সৌরভ আরও বলেন, ‘করাচি বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে হোটেলের দিকে যাওয়ার কথা মনে পড়ছে। এটা ছিল ১০ কিলোমিটারের মতো রাস্তা। প্রধান রাস্তার দুই পাশের সমস্ত রাস্তা বন্ধ করা ছিল। আর অসংখ্য নিরাপত্তাকর্মী ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। যে দিকেই তাকানো যাক না কেন, কেবল ওদেরকেই দেখা যাচ্ছিল। করাচির হোটেলে মনে হয় তিন তলায় আমরা ছিলাম। আর তাই দ্বিতীয় ও চতুর্থ তলার ঘর কাউকে দেওয়া হয়নি।